খাঁটি গাওয়া ঘিঃ
‘ঘি’ আসলে কি? ঘি দুগ্ধজাত খাবার। ইংরেজিতে ঘি- কে বলা হয় ক্লারিফায়েড বাটার(Clarified Butter) অর্থাৎ পরিশোধিত মাখন। এতে রয়েছে ৯৯ দশমিক ৯ শতাংশ চর্বি। বাকি ০১ শতাংশ জলীয় উপাদান, চর্বিতে দ্রবণীয় ভিটামিন ও দুধের পোড়া অংশ। ঘি মূলত স্যাচুরেটেড ফ্যাট বা সম্পৃক্ত চর্বির উৎস। তাই এটি বাইরের তাপমাত্রাতেই সংরক্ষণ করা যায়।
ঘি যেমন স্বাদ তেমনি সুঘ্রাণের জন্য সমাদৃত। এটি এ উপমহাদেশের মানুষের খুব প্রিয় খাবারের একটি। ঘি এমন এক উপাদান, যা সব ধরনের মুখরোচক খাবারে ব্যবহৃত হয়। বাঙালিদের সুস্বাদু খাবার রান্নায় ঘির ব্যবহার অপরিহার্য। এটি খাবারে তৃপ্তি আনয়নের পাশাপাশি শরীরে বিভিন্ন ভিটামিন এর উৎস হিসেবেও কাজ করে।



‘ঘি’ এর পুষ্টি উপাদানঃ
এক টেবিল চামচ (১৫ গ্রাম) ঘিয়ে প্রায় ১৩৫ কিলো ক্যালরি শক্তি, ৯ গ্রাম স্যাচুরেটেড ফ্যাট এবং ৪৫ মিলিগ্রাম কোলেস্টেরল উপস্থিত থাকে।
গবেষণা বলছেন, ঘি পুষ্টি উপাদানে ভরপুর। তাই আয়ূর্বেদ শাস্ত্রেও ব্যবহার হয় ওষুধ হিসেবে। এতে রয়েছে ক্যালোরি, প্রোটিন, কার্বোহাইড্রেট, ভিটামিন 'এ', 'ডি', 'ই' এবং 'কে'। তাছাড়াও আছে স্যাচুরেটেড, মনো আনস্যাচুরেটেড এবং পলি আনস্যাচুরেটেড ফ্যাট। ঘিয়ে উপস্থিত আছে ওমেগা-থ্রি ফ্যাট, যা সব বয়সীর জন্যই খুব উপকারী।
‘ঘি’ এর উপকারিতাঃ
ঘি খাওয়ার বিষয়ে নানা বিতর্ক রয়েছে। অনেকেই মনে করেন যে, ঘি খাওয়া নাকি শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক, যা একেবারেই ঠিক নয়। একাধিক গবেষণায় একথা প্রমাণিত হয়ে গেছে যে নিয়মিত এক চামচ করে ঘি খেলে একাধিক শারীরিক উপকার পাওয়া যায়। আর যদি খালি পেটে ঘি খেতে পারেন, তাহলে তো কথাই নেই! ‘ইন্ডিয়ান জার্নাল অব মেডিকেল রিসার্চ’–এর প্রতিবেদন অনুযায়ী, সর্দি-কাশি সারাতে, দুর্বলতা কাটাতে, ত্বকের সমস্যা দূর করতে ঘি ব্যবহৃত হয়। বিশেষ করে ত্বকের যত্নে পুরোনো ঘিয়ের গুণাগুণ অনেক। বিশেষজ্ঞরা বলেন, শীতকালই ঘি খাওয়ার উপযুক্ত সময়। এ সময় এটি সহজে হজম হয় ও শরীর গরম রাখে। আয়ুর্বেদ শাস্ত্র মতে, ঘি-এর ভেতরে উপস্থিত একাধিক উপকারী উপাদান একদিকে যেমন শরীরে গঠনে সাহায্য করে। তেমনি দেহের প্রতিটি অঙ্গকে এতটা শক্তিশালী করে তোলে যে নানাবিধ রোগ ভোগের আশঙ্কা একেবারে কমে যায়। সেই সঙ্গে মেলে আরও অনেক উপকারিতাও।
• রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়
• মারাত্মক রোগের ঝুঁকি কমায়
• এনার্জি বাড়ায়
• ক্যান্সার রোগকে দূরে রাখে
• কোষেদের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি পায়
• আর্থ্রাইটিসের মতো রোগ দূরে থাকে
• রক্তে খারাপ কোলেস্টেরলের মাত্রা কমায়
• মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতার বিকাশ ঘটায়
• ব্রেন টনিক হিসেবে কাজ করে
• দৃষ্টিশক্তির উন্নতি ঘটায়
• পাকস্থলীর জন্য ভাল
• ক্ষত নিরাময় উন্নত করে
• ডায়াবেটিস বিরোধী
• দুধের বিকল্প হয়ে উঠতে পারে ঘি
• উপকারি অ্যান্টিঅক্সিডেন্টে পরিপূর্ণ
• ওজন কমাতে সাহায্য করে
• ভিটামিনে সমৃদ্ধ
• সুস্থ অস্থিসন্ধির জন্য
• হজম ক্ষমতা বাড়ায়
• ক্ষিদে কমায়
• অ্যালার্জি কমায়
• কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে
• রাগ প্রশমন
• স্ট্যাবল স্যাচুরেটেড বন্ডস
• বাচ্চাদের মালিশের তেল হিসেবে
• শুকনো ত্বকের সমাধানে
• ত্বকের উজ্জ্বলতা বৃদ্ধি পায়
• ত্বকের প্রদাহ কমায়
• বলিরেখা আটকাতে
• বাথ অয়েল হিসেবে
• ঠোঁটের যত্নে
• চোখের নীচে কালচে দাগের সারাতে
• চুল পড়া প্রতিরোধ করে
• মানসিক বিষক্রিয়াগত মাথাব্যথা মুছে ফেলে